নেপনিয়নকে ‘বিপ্লবের সন্তান’ বলা হয় - কারণ ব্যাখ্যা কর।
নেপনিয়নকে ‘বিপ্লবের সন্তান’ বলা হয় কেন? |
নেপনিয়নকে 'বিপ্লবের সন্তান' বলার কারণ :
তাঁর এই বিপ্লবের সন্তান হয়ে ওঠার পিছনে আরও যেসব সমস্ত বিষয় গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা নিয়েছিল তা হল :
১) বিপ্লবী আদর্শের বাস্তবায়ন :
১৭৮৯ সালে ফ্রান্সের সংবিধান সভা সে-দেশ থেকে সামন্ত প্রথা, ভূমিদাস প্রথা, করভি বা বেগর শ্রম, টাইট বা ধর্মকর ইত্যাদি বিলোপ ঘটিয়েছিল। নেপোলিয়ান ক্ষমতায় আসার পর বিপ্লবী সরকারের এইসব নিয়মকে সচেতন ভাবেই বহাল রেখেছিলেন।২) বিপ্লবী আদর্শের প্রসার :
শুধু বহাল রাখাই নয়, বিপ্লবের মূল মন্ত্র সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার আদর্শের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।৩) পুরাতন তন্ত্রের ধ্বংস সাধন :
ফ্রান্সের পাশাপাশি জার্মানি ইতালি সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পুরাতন তন্ত্রকে ধ্বংস করে সাম্য ও মৈত্রীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। আর এ কারণে বিদেশিদের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ‘বিপ্লবের অগ্নিময় তরবারি’।৪) আইন ব্যবস্থার সংস্কার :
ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে প্রচলিত বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থার অবসান ঘটানোর জন্য নেপোলিয়ন আইন ব্যবস্থার সংস্কার করেছিলেন। পরস্পর বিরোধী আইনগুলির মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে সমতার নীতি অনুসরণ করেন। এই উদ্দেশ্যেই ১৮০৪ সালে প্রবর্তন করেন ‘কোড নেপোলিয়ন’।৫) বিপ্লবী আদর্শের স্থায়ীকরণের চেষ্টা :
বিপ্লবের পরপরই মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল প্রতি বিপ্লবী শক্তি। তাতে দমন করে নেপোলিয়ন ফ্রান্সের বিপ্লবী আদর্শকে রক্ষা করেছিলেন।উপসংহার :
সমসাময়িক রাজনৈতিক ও অর্থসামাজিক ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায় ফরাসি বিপ্লব না হলে নেপোলিয়নের মতো সাধারণ ঘরের এক নগণ্য সন্তান কখনোই রাষ্ট্রনেতা হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতেন না। এ কথা তিনি নিজেও উপলব্ধি করেছিলেন। আর সে কারণেই বিপ্লব ও বিপ্লবী আদর্শকে রক্ষায় তিনি বদ্ধপরিকর ছিলেন। নিজেই হয়ে উঠেছিলেন বিপ্লব এবং বিপ্লববাদের ধারক ও বাহক। মূলত এ কারণেই তিনি নিজেকে বিপ্লবের সন্তান বলে তুলে ধরেছিলেন। আর ঐতিহাসিক ফিশার তাঁকে 'বিপ্লবের সন্তান' বলে অভিহিত করেছেন।-----------xx------------
নেপোলিয়ন বিষয়ে আরও প্রশ্ন ও উত্তর
- নেপনিয়নকে ‘বিপ্লবের সন্তান’ বলা হয় কেন?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন