জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় বিসমার্ক কি নীতি গ্রহণ করেন? অথবা, জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় বিসমার্কের 'রক্ত ও লৌহ নীতি' সম্পর্কে আলোচনা করো।
জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় বিসমার্ক কি নীতি গ্রহণ করেন?
অথবা,
জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় বিসমার্কের 'রক্ত ও লৌহ নীতি' সম্পর্কে আলোচনা করো
চতুর্থ ফ্রেডরিক উইলিয়ামের পরবর্তী রাজা প্রথম উইলিয়াম প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ছিলেন।জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় বিসমার্কের নীতি
১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে অটো ফন বিসমার্ক (১৮৬২-১৮৯০ খ্রি.) প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হলে প্রথম উইলিয়ামের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হওয়ার সুযোগ পায়। জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে তিনি নিম্নলিখিত নীতি গ্রহণ করেন -
[1] রাজতন্ত্রে বিশ্বাস: রাজতন্ত্রে বিশ্বাসী বিসমার্কের উদ্দেশ্য ছিল প্রশিয়ার রাজতন্ত্রের অধীনে সমগ্র জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং প্রাশিয়ার রাজতান্ত্রিক শাসনের ভাবধারায় জার্মানিকে প্রভাবিত করা।
[2] রক্ত ও লৌহ: বিসমার্ক গণতান্ত্রিক রীতিনীতির ওপর নয়, 'রক্ত ও লৌহ নীতি'র উপর আস্থাশীল ছিলেন। তিনি প্রাশিয়ার আইন সভায় ঘোষণা করেন যে, "বিতর্ক ভোটের দ্বারা নয়, রক্ত ও লৌহ নীতির মাধ্যমেই জার্মানির সমস্যার সমাধান হবে।"
[3] সামরিক শক্তিতে আস্থা: বিসমার্ক উপলব্ধি করেন যে, একমাত্র সামরিক শক্তির জোরেই জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এজন্য তিনি প্রতিনিধি সভার মত অগ্রাহ্য করে প্রাশিয়ার সামরিক শক্তি বাড়ানোর উদ্যোগ নেন এবং তিনটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের মাধ্যমে সমগ্র জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। যথা - [i] ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ, [ii] অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ, [iii] ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধ।
উপসংহার: কূটনীতির জাদুকর বিসমার্ক কুটকৌশল এবং 'রক্ত ও লৌহ নীতি'র দ্বারা জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। ঐতিহাসিক হ্যাজেন মনে করেন, তাঁর কাছে বাস্তব কূটনীতিই ছিল মুখ্য, ন্যায়নীতি ছিল গৌণ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন